আপনাদের একটা কমন প্রশ্ন থাকে সেটা হল পার্টটাইম জব করে টিউশন ফিস + লিভিং কস্ট বহন করা যাবে কিনা?এর ছোট উত্তর হল না।
🦧🦧এখন কেনো না সেটা নিয়েই আলোনা করব।
একটা দেশের উদাহরণ হিসাবে আয়ারল্যান্ড নিয়ে আলোচনা করলাম।
😇😇আয়ারল্যান্ড দেশে এভারেজ লিভিং কস্ট বর্তমানে ১০০০০ ইউরো বছরে,জায়গা ভেদে অবশ্যই এটা কম বেশি হবে আর আপনার জিবনযাত্রার উপরও এটা নির্ভর করে অন্যদিকে আপনার মিনামাম ইনকাম ঘন্টায় ১০-১২ ইউরো হবে এর বেশিও হতে পারে কিন্তু তার সম্ভাবনা কম।আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না এর উপরে করলে সেটা অবৈধ কিন্তু গ্রিস্মকালিন ছুটিতে আপনি ফুলটাইম কাজ করতে পারবেন।কিন্তু এতে করেও আপনি ম্যাক্সিমাম লিভিং কস্টটাই তুলতে পারবেন কিন্তু এটারও কোনো গ্যারান্টি নেই। যদি সত্যি বলি আপনার টিউশন ফিস হবে গড়ে ১০-১২ হাজার ইউরো প্রতি বছর অনার্সে এবং মাস্টার্স এর জন্য হবে এক বছরে ১২-১৫ হাজার ইউরো গড়ে, জায়গা এবং কোর্সভেদে কম বেশি হবে আর একটা কথা আপনি যাওয়ার পরদিনই আপনার জন্য জব রেডি থাকবে না,আপনাকে প্রথমে পি পি এস কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।ওটা পাওয়ার পর আপনি জবে ঢুকতে পারবেন।
সুতরাং,বলা যায় খন্ডকালিন চাকুরি আপনাকে একটা সাপোর্ট দিবে এর বেশি আর কিছু না। অনেক এজেন্সি আপনাকে অনেক বড় বড় সপ্ন দেখাবে যে আপনি পার্টটাইম জব করে কোটিপতি হয়ে যাবেন।কিন্তু এটা একদমই নয়,এদের থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকুন।যদি সহজ করে বলি তাইলে পুরা টিউশন ফিসটা আপনার সেল্ফ ফান্ডিং এ করতে হবে যদি অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করতে চান।
বিঃদ্রঃ কিছু কিছু দেশে ছাত্র থাকা অবস্থায় টিউশন ফিস এবং লিভিং কস্ট ম্যানেজ করা যায়। তবে সেটা অনিশ্চিত। আবার আরও একটা কথা না বললে নয়. সেটা হলো খুব কম লোকই আছে যারা বাইরে পড়াশোনা করতে যেয়ে বাড়ি থেকে টাকা নেয়।
যদি কোনো প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে করতে পারেন।
ধন্যবাদ।
গত পর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম যে , স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় কোনো ভাবেও নিজের খরচ ও টিউশন ফিস ম্যানেজ করা যায় না। কিন্তু আবার দেখা যায় ,বেশির ভাগ স্টুডেন্ট কিন্তু বাসা থেকে টাকা নেয় না। এখন প্রশ্ন হলো তাহলে কিভাবে ম্যানেজ করতে পারি ?
রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া গরিব দেশ ভাই ওই দেশে যেয়ে কি হবে?
রোমানিয়া, বুলগেরিয়া,সার্বিয়া বাংলাদেশ থেকে গরিব আমি ওই দেশে যাব না। ওর থেকে বাংলাদেশে বসে রিকশা চালাবো তাতেও বেশি ইনকাম করা যাবে। যারা দেশে বসে এসব কথা বলে বেড়ায় তাদের জন্যই আজকের এই লেখা।
আচ্ছা তাহলে আমরা একটু দেখে আসি কোন দেশ কতটা গরীব এবং কোন দেশের বর্তমান অবস্থা কেমন।
মলদোভা
ইউরোপে সবচেয়ে গরিব রাষ্ট্রের তকমা পেয়েছে মলদোভা। পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত দেশটি একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র, যার পশ্চিমে রয়েছে রোমানিয়া এবং উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ—এ তিন দিক বরাবর রয়েছে ইউক্রেন। ছিসনাউ দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী। ১৯৯১ সালে ইউএসএসআরের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে মলদোভা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, । পার ক্যাপিটা হিসাবে মলদোভার বর্তমান জিডিপি ১ হাজার ৬৭৯ ইউএস ডলার, যা ইউরোপের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশটির শতকরা ১৩ দশমিক ৩ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন।
ইউক্রেন
ইউক্রেনের নাম শুনলে আমাদের চোখের সামনে সবার প্রথমে ভেসে ওঠে আন্দ্রি শেভোচেঙ্কোর নাম, একসময় তাঁর পায়ের জাদুতে মুখরিত ছিল গোটা ইউরোপের ফুটবল। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার দখল নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায় ইউক্রেন, যা দেশটির অর্থনীতিকে আরও বিপর্যস্ত করে তোলে। পার ক্যাপিটা হিসাবে ইউক্রেনের বর্তমান জিডিপির পরিমাণ ২ হাজার ১৩৩ ইউএস ডলার, যা ইউরোপের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।বর্তমানে ইউক্রেনেও বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এবং ভালভাবে তাদের থাকা-খাওয়া এবং চলাফেরার ব্যায় ম্যানেজ করছে। বর্তমানে বাংলাদেশ অনেক উন্নত এবং ডিজিটাল দেশ হিসেবে আমাদের পার ক্যাপিটা ইনকাম 2064 ইউএস ডলার। আমরা এখন বলি বাংলাদেশ অনেক উন্নত হয়ে গেছে আগের থেকে এবং বাংলাদেশ বসে যদি আমরা নিজের খরচ নিজে চালিয়ে পড়াশোনা করতে পারি তাহলে ইউক্রেনে কেন সম্ভব নয়।
কসোভো
কসোভো ইউরোপে বিতর্কিত অঞ্চলগুলার মধ্যে একটি। ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে আলাদা হয়ে কসোভো একটি পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক জরিপ অনুযায়ী দেশটিতে বেকারত্বের হার ৩৪.৮ শতাংশ এবং পার ক্যাপিটা হিসাবে কসোভোর জিডিপির পরিমাণ ৩ হাজার ৮৯৩ ইউএস ডলার।
বর্তমানে বাংলাদেশ অনেক উন্নত এবং ডিজিটাল দেশ হিসেবে আমাদের পার ক্যাপিটা ইনকাম 2064 ইউএস ডলার। কসোভো বাংলাদেশ থেকেও প্রায় দ্বিগুণ ধনী। আবার আমরা বাংলাদেশ থেকে গলা ফাটিয়ে বলি কসোভো তে মানুষ যায় ? ওদের নিজের খাবার জোটে না আমরা যেয়ে কি করবো ?
আলবেনিয়া
আলবেনিয়া গোটা ইউরোপে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে একটি। ইতিহাসের অন্যতম সমালোচিত রাষ্ট্রনায়ক এনভার হেক্সা ছিলেন আলবেনিয়ার একসময়কার রাষ্ট্রপ্রধান। বলাবাহুল্য, এ সুদীর্ঘ সময় আলবেনিয়া ছিল আজকের দিনের উত্তর কোরিয়ার মতো গোটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দেশ। পার ক্যাপিটা হিসাবে আলবেনিয়ার জিডিপির পরিমাণ ৪ হাজার ৫৩৭ ইউএস ডলার। সুতরাং বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই গুণ বড়লোক ।
বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা
১৯৯২ সালে যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন থেকে আলাদা হয়ে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার আত্মপ্রকাশ ঘটে। পার ক্যাপিটা হিসাবে বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার জিডিপির পরিমাণ ৫ হাজার ৬৪৭ ইউএস ডলার। মুসলিম-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে বসনিয়ানদের শাসন প্রতিষ্ঠিত থাকলেও সার্ব-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে তাদের কোনো কর্তৃত্ব নেই। একই অবস্থা ক্রোয়েট সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে। যে বসনিয়ার জঙ্গলে বাংলাদেশী মানুষ বরফে চাপা পড়ে মরছে তারাও আমাদের থেকে ২.৫ গুণ বড়োলোক।
মেসিডোনিয়া
বলকান উপদ্বীপের প্রায় ২০ লাখ জনসংখ্যা-অধ্যুষিত দেশটি উত্তরে সার্বিয়া, উত্তর-পশ্চিমে কসোভো, পশ্চিমে আলবেনিয়া, পূর্বে বুলগেরিয়া ও দক্ষিণে গ্রিসের সঙ্গে সংযুক্ত। ১৯৯২ সালে এক গণভোটের মাধ্যমে যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন থেকে আলাদা হয়ে মেসিডোনিয়া এক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পার ক্যাপিটা হিসাবে দেশটির জিডিপির পরিমাণ ৫ হাজার ৪৪২ ইউএস ডলার। ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী মেসিডোনিয়ার শতকরা ২১ দশমিক ৯ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন।যে সব দেশের নামও আমরা মনেকরিনা ইউরোপের দেশ হিসাবে তারাও আমাদের থেকে ২.৫ গুণ বড়োলোক।
সার্বিয়া
ইউরোপের সার্বিয়ার পরিচিতি এক খলনায়ক হিসেবে। পার ক্যাপিটা হিসাবে সার্বিয়ার জিডিপির পরিমাণ ৫ হাজার ৯০০ ইউএস ডলার, যা গোটা ইউরোপের মধ্যে সপ্তম সর্বনিম্ন। অথচ যুগোস্লাভিয়া যুগে সার্বিয়া ছিল ইউরোপের সবচেয়ে প্রগতিশীল অর্থনীতিগুলোর মধ্যে একটি। দেশটির রাজধানী বেলগ্রেডকে একসময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বর্তমান প্রশাসনিক রাজধানী ব্রাসেলসের সঙ্গে তুলনা করা হতো।
এই সার্বিয়াকে আমরা গরিব গরিব বলে গলা ফাটায় কিন্তু দেখা যায় এ দেশটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় তিনগুণ বড়লোক।
বেলারুশ
বেলারুশ পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত ৮০ হাজার ২০০ বর্গমাইলের একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। বিশ্ব মানবাধিকার সূচকে বেলারুশের অবস্থান এখনো আশানুরূপ নয়, এমনকি দেশটির গণমাধ্যমও ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো সে অর্থে স্বাধীন নয়। একই সঙ্গে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির মাত্রাও অত্যন্ত প্রবল। পার ক্যাপিটা হিসাবে বেলারুশের জিডিপির পরিমাণ ৬ হাজার ২৮৩ ইউএস ডলার।
আজ থেকে তিন চার বছর আগেও এই বেলারুশে বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী গিয়েছিলেন তাদের পড়াশুনার জন্যে। তাদের কারো কাছ থেকে শুনিনাই যে তারা সেখানে গিয়ে দেশ থেকে টাকা নিয়ে পড়াশুনা করেছে। যারা ইনকাম করতে পেরেছে তারা পড়েছে আর যারা পারেনি তারা অন্য দেশে চলে গেছে। বাংলাদেশে কেউ ফিরে আসেনি। কারণ যতই গরীব হোক না কোনো বর্ডার এর দেশ গুলো সেঙ্গেন দেশ।
মন্টিনিগ্রো
আড্রিয়াটিক সাগরের তীরে অবস্থিত মন্টিনিগ্রো বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর একটি। ২০০৬ সালে মন্টিনিগ্রো সার্বিয়া থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত কবি লর্ড বাইরেন মন্টিনিগ্রোকে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দেশ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। পার ক্যাপিটা হিসাবে মন্টিনিগ্রোর জিডিপির পরিমাণ ৭ হাজার ৬৬৯ ইউএস ডলার।
দেশটির অর্থনীতি মূলত এনার্জি ইন্ডাস্ট্রিনির্ভর। সাম্প্রতিক সময়ে নগরায়ণের ফলে দেশটিতে ব্যাপক পরিমাণে বন-জঙ্গল ধ্বংস করা হয়েছে, যার কারণে দেশটিতে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ অনেকটা কমে এসেছে।
এই দেশে তো যাওয়ার কথা আমরা স্বপ্নেও ভাবি না কিন্তু আসল সত্য হলো এই দেশটি বাংলাদেশ থেকে সাড়ে তিন গুণ বড় লোক এবং ইউরোপের দেশ সাথে সাথে এটি সেনজেন কান্ট্রি এর পাশের দেশ গুলোর মধ্যে একটি।
বুলগেরিয়া
পার ক্যাপিটা হিসাবে বুলগেরিয়ার জিডিপির পরিমাণ ৮ হাজার ৩১ ইউএস ডলার, যা ইউরোপের মধ্যে দশম সর্বনিম্ন। এ ছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্র রাষ্ট্রের তকমা পাওয়া দেশটির নামও বুলগেরিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশটিতে কমিউনিজমভিত্তিক শাসনব্যবস্থার প্রচলন ছিল। ২০০১ সাল থেকে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক-সব দিক থেকে বুলগেরিয়া উন্নতি লাভ করতে শুরু করে। বর্তমানে তাই আন্তর্জাতিক মানব উন্নয়ন সূচকে বুলগেরিয়ার অবস্থান ৫৬ তম।
ভাই বুলগেরিয়ান দের নিজেদেরই চাকরি নেই তারা নিজেরাই অন্য দেশে যায় কাজ করার জন্য ওইখানে কোন কাজ নেই, বেতন দেয় না আরো কত কথা বলি . আমরা কিন্তু বুলগেরিয়ার মতো দেশটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় চারগুণ বড়লোক এবং চার গুণ উন্নত সুতরাং এরা যদি গরিব হয় তাহলে দেখা যায় আমরা হয় ফকির না হলে মিসকিন।
এতক্ষণ আমরা দেখলাম শুধুমাত্র পার ক্যাপিটা ইনকাম এর দিক দিয়ে কোন দেশ কতটুকু বড়লোক এবং কাদের অবস্থা কেমন।
এখন আমরা আরো একটু গভীরে যাই দেখি সেখানে কেমন সুযোগ-সুবিধা কিংবা জীবনযাত্রার মান কেমন।
রোমানিয়া, সার্বিয়া, বস্নিয়া, আলবেনিয়া এসব দেশগুলো যেহেতু ইউরোপিয়ান দেশ সুতরাং তাদের চলাফেরা এবং জীবনযাত্রার মান অবশ্যই ইউরোপিয়ানদের মতোই। এশিয়ান দের মতো তো আর না। যেমন সেখানে বাড়িঘরের অবস্থা এবং ব্যবস্থা আমাদের দেশের ফাইভ স্টার হোটেলের মত তো অবশ্যই হবে। কারণ যেহেতু শীতপ্রধান দেশ এবং বরফ পড়ার প্রবণতা সেখানে আছে সেহেতু বাড়িঘরের কন্ডিশন তো অবশ্যই ভালো করতে হবে। রাস্তাঘাট , এছাড়া বলকান রাষ্ট্রগুলোতে ইউরোপের দেশগুলোর মতোই ট্যাক্স সিস্টেম রয়েছে। সুতরাং আপনি সারাজীবন শুধু টাকা দিয়ে যাবেন তা তো না , আপনি একটা নির্দিষ্ট সময় শেষে সেটা অবশ্যই ফেরত পাবেন। যেমন, বৃদ্ধ বয়সে আপনাকে আপনার ট্যাক্সের টাকাই আপনাকে ভাতা হিসেবে প্রদান করবে।
অন্যদিকে যখন একজন সন্তান জন্মগ্রহণ করে 18 বছর বয়স পর্যন্ত সরকার তার পড়াশোনা এবং অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতি মাসে টাকা দিয়ে থাকে এবং ওইসব দেশের নাগরিকদের জন্য বাড়ি করতে সরকার থেকে লোন দেওয়া হয়ে থাকে। যেমন ধরুন, একটা বাড়ির দাম যদি দুই লাখ ইউরো হয় তাহলে সম্ভবত 30 হাজার ইউরো আপনাকে ডাউন পেমেন্ট করতে হবে এবং সরকার প্রতিমাসে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা কেটে নিয়ে আপনার লোন শোধ করবে।
একইভাবে গাড়ি কিনতে আপনাকে সরকারের লোন দিবে। এখন বাংলাদেশের মতো জায়গায় থেকে 50 লক্ষ অথবা এক কোটি টাকা দিয়ে একটি গাড়ি কেনার কথা আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেরা স্বপ্নেও দেখি না। বড়জোর একটা মোটরবাইক এর বেশি না।
কিন্তু ইউরোপের দেশগুলোতে যেহেতু গাড়ি তৈরি হয় তাই ওখানে 1000 ইউরোতে আপনি প্রাইভেটকার কিনতে পাবেন সেটা হয়তো বা আমাদের দেশের 40 থেকে 50 লাখ টাকার গাড়ির কন্ডিশন এর মতো হবে।
১000 ইউরোতে গাড়ি কিনার কথা চিন্তা করা যায় কিন্তু 50 লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনার কথা সবাই চিন্তা করতে পারে না।
আমার একটা ছোট ভাই রোমানিয়াতে থাকে সে বলে তার কোম্পানির গেট ম্যান যে গাড়িতে করে আসে এরকম গাড়ি আমাদের দেশের মন্ত্রী মিনিস্টার রাও সবাই চালায় না। তাদের জীবনযাত্রার মান আমাদের দেশের মন্ত্রী মিনিস্টার এর থেকে অনেক ভাল।
এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে
আজ থেকে তিন চার বছর আগে যারা বেলারুশ গিয়েছিলেন তারা কিন্তু সকলেই অন্য সেনজেনভুক্ত দেশই চলে গেছে কেউ কেউ পড়াশোনা শেষ করছেন আর কেউ কেউ করেনি। আর যদি হাতেগোনা একজন দুজন লোক দেশে ফিরে এসে থাকে তাহলে বুঝতে হবে তারা সেনজেন কান্ট্রিতে যেয়েও থাকতে পারবে না। এমনিতেই চলে আসবে কারন আলালের ঘরের দুলাল তো ঘরে বসে খাওয়া তাদের অভ্যাস। আবার যারা ইউক্রেনে যায় তারা ইউক্রেনে পড়াশোনা শেষ করে। আর যাদের টার্গেট অন্যদেশে চলে যাবে তারা ঠিকই চলে যায় কারণ বেলারুশ এবং ইউক্রেনের সাথেই সেনজেন ভুক্ত দেশের বর্ডার। তাই বাংলাদেশ থেকে লাফ দিয়ে সেনজেনভুক্ত দেশ যেতে চাইলে হয় খালে ডুবে মরতে হবে না হয় নদীতে পড়ে মরতে হবে কিন্তু ইউক্রেন, বেলারুশ, সার্বিয়া, আলবেনিয়া এসব দেশ থেকে লাফ দিলে ঠিকই সেনজেনভুক্ত দেশেই আপনার পা টা পড়বে। যেটা বাংলাদেশ থেকে কোনদিন সম্ভব নয়। আমার দেখা যায় বাংলাদেশ থেকে সেনজেনভুক্ত দেশে স্টুডেন্ট ভিসায় অথবা টুরিস্ট ভিসা যেটাই করতে জাননা কেন অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে এবং অনেক কঠিন রাস্তা পার করতে হয় আমাদের। কিন্তু আপনি ইউক্রেন ,বেলারুশ, সার্বিয়া, কসোভো, মন্টিনিগ্রো যেখানেই যান না কেন ওইখানে যেয়ে 6 মাস থেকে তারপর আশপাশের দুই তিনটা দেশ ঘুরে সেনজেন ভুক্ত দেশের ভিসার জন্য আবেদন করেন, ঠিকই পেয়ে যাবেন কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কোনদিন টুরিস্ট ভিসা পাবেন না সেটা আমাদের মত মধ্যবিত্তদের জন্য। যাদের কোটি কোটি টাকা আছে তাদের কথা আলাদা। আবার যদি কেউ সেনজেনভুক্ত দেশ এ যেতে চায় তাহলে ভিসা পাওয়ার পসিবিলিটি যত বেশি কঠিন এইসব দেশগুলো অর্থাৎ বলকান দেশগুলোতে যেতে হলে ভিসার কথা চিন্তাই করা লাগেনা। কাগজপত্র সব ঠিক রেখে ভিসা করতে দিলে চোখ বন্ধ করে ভিসা পাওয়া যায় সুতরাং যাদের যোগ্যতা মানে রেজাল্ট কম বা আইএলটিএস নাই তারা নিশ্চিন্ত মনে এসব দেশে যেতে পারেন আপনার যদি সামর্থ্য থাকে পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন পড়াশোনা শেষ করে তারপর অন্য দেশে মুভ করবেন অথবা যদি সামর্থ্য না থাকে কিংবা মেন্টালিটি এমন থেকে থাকে যে সেনজেন ভুক্ত দেশে চলে যাবেন সেক্ষেত্রে আপনার জন্য কঠিন কিছু হবে না যা বাংলাদেশ থেকে কোনদিন সম্ভব নয়।
আজ যারা বলকান দেশগুলো নিয়ে এইসব কথা বলে 1, 2 বছর পর তারাই এই দেশগুলোতে যাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে যাবে। কারন রোমানিয়া, ক্রোয়েশিয়া এবং বুলগেরিয়া যখনই সেনজেন ভুক্ত হয়ে যাবে তখনই লোকে বেলারুশ, ইউক্রেনের মতো করে আলবেনিয়া, সার্বিয়া,বস্নিয়া, কসোভো, মন্টিনিগ্রো, মলদোভা এই দেশগুলোতে যাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগবে। কারণ এই দেশগুলোই হবে তখন সেনজেন এ ঢোকার একমাত্র সহজ রাস্তা।
যারা দেশে বসে ফালপাড়ে তারা দেশেই থাকবে কোনো দিন ইউরোপের মুখ দেখবে না। কারণ তারা সারাজীবন কোন দেশে গেলে কত টাকা ইনকাম করা যাবে ,কোন দেশে কেমন সুযোগ পাওয়া যাবে এই চিন্তাই করে যাবে।
তাই আমি বরাবরের মত এখনো বলবো যার যার সামর্থ্য এবং যোগ্যতা অনুযায়ী ইউরোপের যেকোনো দেশে যদি যাওয়ার সুযোগ হয় তাহলে সেখানে অবশ্যই যাবেন এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন যদি সম্ভব হয়। আর না হলে 6 মাস থেকে 1 বছর পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরে বসে থাকবেন তারপর দেখবেন আপনার রাস্তা আপনি চিনতে পারবেন। আর যারা চিন্তা করে আমি আজ সার্বিয়া তে পা দিব, কাল হাঙ্গেরিতে পা রাখবো। এমন চিন্তাধারার লোকগুলোই বিপদে পড়ে এবং অন্যান্য লোকের কাছে বলে বেড়ায় এইদেশ ভালো না, ওই দেশ ভালো না, এই দেশের মানুষ খারাপ, ওই দেশের বর্ডার খারাপ, আরো কত কি........।
আজ তাহলে এই পর্যন্তই। দেখা হবে অন্য কোনো দিন অন্য কোনো বিষয় নিয়ে।
ধন্যবাদ সবাইকে ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য।
আর্কিমিডিস।



No comments:
Post a Comment